গেমিং মানেই শুধু গ্যাম্বলিং নয়

ভিডিও গেমিংয়ে বিলিয়ন ডলারের হাতছানি। পিসি, কনসোল আর স্মার্টফোন গেমিংয়ে রমরমা ভিডিও গেমিংয়ের বিশ্ববাজার। বর্তমানে ১৬ হাজার কোটি (১৬০ বিলিয়ন) ডলারের ভিডিও গেমিং ইন্ডাস্ট্রির বাজার। দিন দিন এই বাজারটি বড় হচ্ছে।
তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক অন্যান্য খাতের মতো গেম ডেভেলপিংয়ে দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। এই বাজারের বড় একটা অংশ নিজেদের দখলে নিতে পারে দেশের তরুণ গেমিং ডেভেলপাররাও।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে বর্তমান সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে আইসিটি খাত থেকে ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করতে চায়। এই সময়ে ভিডিও গেমিং ইন্ডাস্ট্রির যদি ৫ শতাংশও আমরা দখলে নিতে পারি তাহলে ৮ বিলিয়ন ডলার আয় করা সম্ভব।
তবে ভিডিও গেম ডেভেলপমেন্টে আরও গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। দেশে স্থানীয়ভাবে ছোট পরিসরে কয়েকটি কোম্পানি কাজ করছে।
ইতিমধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক গেমিং ডেভেলপ কোম্পানিও দেশে বিনিয়োগের পাশাপাশি অফিস খুলেছে। এর মধ্যে জিঙ্গা এবং মুনফ্রগ বড় পরিসরে দেশে কাজ করছে।
ফার্ম ভিলা, মাফিয়া ওয়ারের মতো গেম তৈরি করেছে মুনফ্রগ। এই মুনফ্রগ দেশে উলকা গেমস নামে কার্যক্রম চালাচ্ছে। উল্কা গেমস গত বছর বাংলাদেশে অফিস চালু করেছে।
১৯ জন কর্মী নিয়ে প্রাথমিক কার্যক্রম শুরু করলেও বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটিতে প্রায় ১০০ জনবল কাজ করছে। ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক বিলিয়ন ডলারের মার্কিন গেমিং কোম্পানি জিঙ্গাও দেশে অফিস খুলেছে।
২০১০ সাল থেকে ভারতে অফিস খোলে প্রতিষ্ঠানটি। মুনফ্রগেরও ভারতে অফিস রয়েছে। কোম্পানিটি দুটির ভারতীয় অফিসে কাজ করা অনেক তরুণ এখন নিজেরাই স্টার্টআপ দিয়ে সাফল্যের সঙ্গে গেমিং খাতকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তথ্যপ্রযুক্তি খাতে আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হতে পারে গেমিং ইন্ডাস্ট্রি। এ খাতে আন্তর্জাতিক গেমিং ডেভেলপারদের বিনিয়োগে আকৃষ্ট করতে হবে।
পাশাপাশি এসব গেমিং ইন্ডাস্ট্রিতে বিনিয়োগকারী এবং ডেভেলপারদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে। অনেকে এখন ভিডিও গেমিংয়ে জুয়ার সঙ্গে তুলনা করেন।
ভিডিও গেম আর জুয়া কখনোই এক নয়। গেমিং মানেই গ্যাম্বলিং নয়, এটা সবাইকে স্পষ্ট ভাবে বুঝতে হবে।
অনেক কোম্পানি এ প্রসঙ্গে উল্কা গেমসের প্রধান নির্বাহী বলেন, গেমিং ইন্ডাস্ট্রিকে বড় করতে হলে তরুণদের এ খাতে আগ্রহী করে তুলতে হবে। গেমিং খাতে যে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে এটি তুলে ধরা জরুরি।
আর ভিডিও গেমকে জুয়ার সঙ্গে গুলিয়ে ফেললে এ খাতের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। এদিকটায় সরকার নজর দেবে বলে বিশ্বাস করি।
অনলাইন গেম খেলার সময় প্রাপ্ত কয়েন কী কীভাবে ব্যয় করতে পারবে এটা নিয়ে সরকার নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারে।
এতে যেন ডেভেলপাররা ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন গেম ডেভেলপারদের হেনস্তা না করে। এটি হলে বিকাশমান এ খাতে শুরুতেই বড় ধাক্কা খেতে পারে। তরুণরা গেম ডেভেলপিংয়ে আসতে নিরুৎসাহিত হতে পারে।
ভিডিও গেমিং কে অনলাইন বেটিং আর গ্যাম্বলিং এর সাথে গুলিয়ে ফেললে আইসিটি সেক্টর থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয় করা দুরূহ হয়ে যাবে। মেধাবী গেম ডেভলপাররা নিরুৎসাহিত হবে।